বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন

যেভাবে ফেরত পাঠানো হবে মিয়ানমার সেনা সদস্যদের

যেভাবে ফেরত পাঠানো হবে মিয়ানমার সেনা সদস্যদের

স্বদেশ ডেস্ক:

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বৃহস্পতিবার। বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) জানিয়েছে, মিয়ারমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)-সহ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মোট ৩৩০ জনকে হস্তান্তর করা হবে এক সাথেই।

বিজিবি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ৩৩০ জনকে হস্তান্তরে সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষ।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া এসব সেনা সদস্যদের রাখা হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ ও বান্দরবনের ঘুমধুমের দুটি স্কুলে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই তাদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে। তাদের পরিচয় শনাক্তে এরই মধ্যে তাদের বায়োমেট্রিক সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ জানাচ্ছে, হস্তান্তরের পুরো বিষয়টির নেতৃত্ব দেবে বিজিবি। কক্সবাজারের ইনানীর নৌবাহিনীর ঘাটে যে আনুষ্ঠানিকতা হবে বাংলাদেশসহ দ ‘দেশের প্রতিনিধিরাই থাকবে।

যেভাবে সম্পন্ন হবে পুরো প্রক্রিয়া
বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সাথে যুদ্ধে টিকতে না পারে গত ৪ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে উখিয়া, টেকনাফ ও ঘুমধুম সীমান্ত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে মিয়ানমারের ৩৩০ জন। হাতে গোনা কয়েকজন বাদে বেশিভাগই ছিল মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের সদস্য।

তাদের মধ্যে ১৬০ জন বিজিপি সদস্যকে রাখা হয়েছে বান্দরবনের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে। অপর দলকে রাখা হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে।

এখন পর্যন্ত বিজিবির পরিকল্পনা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বিজিবির ও পুলিশের টিম যাবে টেকনাফের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে অবস্থানরত সেনা সদস্যদের বিজিবির গাড়িতে করে নিয়ে আসা হবে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে।

পরে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৬৬ জনকে তোলা বিজিবির গাড়িতে। পরে দু’টি গ্রুপকে পুলিশ ও বিজিবির কড়া পাহারায় নিয়ে যাওয়া হবে কক্সবাজারের ইনানী বিচ এলাকার নৌবাহিনীর জেটিতে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য বিজিবি আমাদের যে যে ধরনের সহযোগিতা চাইবে আমরা সব ধরনের সহযোগিতাই করব বিজিবিকে। এটা আমাদের প্রটোকলেই বলা রয়েছে।’

ইনানীর এই নৌবাহিনীর জেটি ঘাট এলাকায় হস্তান্তর কার্যক্রমের কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। সেখানে বিজিবি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

সেখান থেকে বাংলাদেশী জাহাজে করে ৩৩০ জনকে তোলা হবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ কর্ণফুলীতে। সেখানে পুরো নিরাপত্তা বজায় রেখে তাদের কর্ণফুলী জাহাজে করে নিয়ে যাওয়া হবে বাংলাদেশে মিয়ানমারের পানিসীমায়।

এই পানিসীমায় মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে দেয়া হবে দেশটি থেকে আসা সেনা সদস্য ও নাগরিকদের।

সংগ্রহ করা হয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট
বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের পর পালিয়ে আসা সৈনা সদস্য ও দেশটির ৩৩০ জন নাগরিকদের তালিকা আগে থেকেই প্রস্তুত করেছিল বিজিবি।

তাদের মধ্যে ৩২৬ জনকে রাখা হয়েছিল কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয় ও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে। বাকি চারজনের চিকিৎসা চলছিল চট্টগ্রামে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর আগে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট গত রোববার ও সোমবার সংগ্রহ করে রাখে স্থানীয় প্রশাসন। কক্সবাজার পাসপোর্ট কার্যালয়ের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহকারীরা দু’টি দলে বিভক্ত হয়ে এক কাজ সম্পন্ন করে।

তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহের পর সেগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে জেলা প্রশাসন ও বিজিবিকে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান জানান, ‘আশ্রিত বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে পালিয়ে মিয়ানমারের এসব সেনা সদস্যদের দেশে পাঠাতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাগ্রহণের কথা জানিয়েছে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসন।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘সার্বিক ব্যবস্থা করেছে বিজিবি। এই প্লানিংটাও ওনাদের। বিজিবি আমাদেরকে যে ধরনের সাপোর্ট চাইবে সে অনুযায়ী আমরা সেই সাপোর্টগুলো দেবো।’
সূত্র : বিবিসি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877